১৯তম ওভারের এক বল বাকি থাকতে রিজওয়ানকে ফিরিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ৮ রান। বোলিংয়ে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কিন্তু পারেননি সেই রান আটকাতে। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে সৌম্য সরকার ফেরান রিজওয়ানকে। ৫৬ বলে চারটি চারে ৬৯ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ হন পাকিস্তানি ওপেনার। বাংলাদেশের দেওয়া ১৭৪ রানের টার্গেটে পাকিস্তান পৌঁছেছে ১ বল হাতে রেখে। রান তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে পাকিস্তানকে দারুণ শুরু এনে দেন অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।

১২ দশমিক ৩ ওভারে ১০১ রান তুলেন বাবর-রিজওয়ান। তাঁদের এই জুটি ভাঙেন পেসার হাসান মাহমুদ। ৪০ বলে ৫৫ রান করা বাবরকে মোসাদ্দেকের ক্যাচ বানান তিনি। এরপর হায়দার আলীকেও সাজঘরে পাঠান হাসান। ২ বলে শূন্য রানে বোল্ড হন হায়দার। তৃতীয় উইকেটে ৬৪ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন রিজওয়ান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। রিজওয়ান ৫৬ বলে ৬৯ রান করে আউট হলেও ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন নওয়াজ। ২০ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

এর আগে, লিটন দাসের ৬৯ ও সাকিব আল হাসানের ৬৮ রানে ভর করে ৭ উইকেটে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে। আগামীকাল শুক্রবার ফাইনালে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।

আজ বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় সিরিজে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ৬ বল খেলে কোনো রান নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ভাগ্যিস নাসিম শাহ প্রথম বলটা ওয়াইড করেছিলেন, নাহয় সে ওভারটা মেইডেন হিসেবেই লেখা থাকতো খাতায়।

শান্তর ডট খেলার প্রবণতা তো ছিলই, দেহভাষ্যেও মিলছিল না ইন্টেন্টের দেখা। যার চাপটা পড়ছিল সৌম্য সরকারের ওপর। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

এরপরও শান্ত ছিলেন খোলসেই, যে কারণে চাপটা ধীরে ধীরে বাড়ছিল বাংলাদেশের ওপর। ওপাশে আসা লিটন দাস খেলছিলেন অবশ্য হাত খুলে। সঙ্গে পাক বোলারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিং বাংলাদেশের কাজটা একটু সহজ করে দিচ্ছিল।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে খোলস ছেড়ে বেরোতে গিয়েই বিদায় নেন শান্ত, ফেরার আগে ১৫ বলে করেন ১২ রান। ভাগ্যিস তার এক বল আগে স্কুপ করে একটা চার আদায় করেছিলেন। নাহয় তার স্ট্রাইক রেটটা যে থাকত আরও নিচের দিকে! দুই ওপেনারকে হারিয়ে বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে তোলে ৪১ রান।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে সাকিব-লিটন জুটির শুরু। প্রথম দিকে সাকিব একটু নড়বড়ে ছিলেন, লিটনের সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝিও হয়ে গিয়েছিল খানিকটা। তবে সেবার ভাগ্যগুণে বেঁচে যাওয়া লিটন এরপর স্বরূপ দেখাতে শুরু করেন। চার-ছক্কা তো আছেই, তা না পেলে অন্তত রানের চাকা অচল হয়ে পড়েনি একটু, এক-দুই রানে ইনিংস গড়ছিলেন সাকিবের সঙ্গে।

৩১ বলে ফিফটি পূরণ করেন লিটন। ৬টি চার আর ২টি ছক্কায় ৬৯ রান করে শেষমেশ থামেন তিনি। ১৩ অক্টোবর তার জন্মদিনটাও রাঙানো হয়ে যায় তাতে। ৫৫ বলে ৮৮ রানের জুটি ভাঙার পর সাকিব অনেকটা একাই লড়েছেন। ৭ ছক্কা আর ৩ চারে ৪২ বলে ৬৯ রান করে সাকিব যখন ফিরছেন, তখন বাংলাদেশের রান ১৬৭। ইনিংসে বল তখনো বাকি ৮টি।

পরের আট বল থেকে কেবল ৬ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। যার ফলে সম্ভাবনা জাগিয়েও বাংলাদেশের রানটা আটকে যায় ১৭০ এর ঘরেই। ব্যাটিংয়ে শেষের ব্যর্থতায় যদি রান এত কম না হতো, তাহলে হয়তো ম্যাচের ফলাফলটাও ভিন্ন হতে পারত! সেটা হলে বাংলাওয়াশ সিরিজ থেকে খালি হাতে ফিরতে হতো না বাংলাদেশকে।

রাকিব/এখন সময়